Latest News
ফেনীতে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে শিক্ষার্থী নিহত
মে ১৯, ২০২৪
বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
মে ১৯, ২০২৪
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ৪
মে ১৯, ২০২৪
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
« জয়নাল আবেদীন »
অনেক কলা-কৌশল আর চাতুরির আশ্রয় নিয়েও শেষরক্ষা হলো না সেই রাজাকারপুত্র মাহবুবুর রহমানের। শেষমেষ তাকে সরতেই হচ্ছে অনিয়মের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা পদবী থেকে। পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ থেকে তাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পরিচালনা পরিষদের সভায়।
সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে পিডিবিএফ চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় এমডি মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসে।
নিউজ১৯৭১ডটকম-এ রাজাকারপুত্র মাহবুবুর রহমানের দুর্নীতি সবিস্তারে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া দেশের আরো কয়েকটি গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হয়। খবরগুলোর অনুলিপি সভায় আলোচনা হয়। সব বিষয় বিবেচনায় এনে এমডি পদ থেকে মাহবুবুর রহমানকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, গত মঙ্গলবার মাহবুবুর রহমানের অনিয়ম ও জালিয়াতির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সচিব বরাবর। মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, সেই তদন্ত প্রতিবেদনে এমডির নিয়োগ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের তথ্য উপাত্ত উঠে আসে।
তদন্ত কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা ক্ষুদ্ধ কণ্ঠে বলেন,‘ প্রধানমন্ত্রীর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানটিতে এমন লুটপাট হয়েছে তা কল্পনার বাইরে। তিনি অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে এমডি হিসেবে ছিলেন। বিভিন্ন দুর্নীতির তথ্য প্রমানাদি উঠে এসেছে তদন্ত প্রতিবেদনে।’
সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায় জানান, কোনো রাজাকারপুত্রের জায়গা এখানে নেই। তা ছাড়া মাহবুবুর রহমানের নিয়োগ যে ঠিক ছিল না এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা সব দুর্নীতির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে এখান থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পল্লী উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার গঠন করেছিলো পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন নামে সংস্থাটি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্থার এমডির নেতৃত্বে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যোগসাজশ করে দরিদ্র মানুষের নামে পাশ হওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ হরিলুট করে নিজেদের ভাগ্য বদলে দেন।
তা ছাড়া আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এমডি পদে নিজেকে আসীন করেন তিনি। এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে অন্ধকারে রেখেই রাতারাতি গেজেট পর্যন্ত বানিয়ে ফেলেন মাহবুবুর রহমান। একদিনে এমডি বনে যাওয়া এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে উঠে আসে একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ।
অভিযোগ রয়েছে, মাহবুবুর রহমান রাজাকারের ছেলে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরে মুক্তিকামী মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন মোস্তাহার আলী দুয়ারী নামের এক রাজাকার।
পিরোজপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নান্না পোদ্দার জানান, মোস্তাহার দুয়ারী পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মিলে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সে ছিল একজন স্বাধীনতাবিরোধী ভয়ংকর রাজাকার।
সেই মোস্তাহার দুয়ারীর ছেলে মাহবুবুর রহমানই সময়ের পরিক্রমায় হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেগড়া সংস্থার সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। দুর্নীতির পাল্লা এতটাই ভারী হয়ে যায় যে, শেষমেষ অপসারিতই হতে হচ্ছে তাকে।
Our facebook page