Latest News
কালিহাতীতে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
মে ১৮, ২০২৪
গোবিন্দগঞ্জে ২১ কেজি গাঁজা জব্দ
মে ১৮, ২০২৪
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
১৯৭১-এ যখন নির্বাচনোত্তর ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করছে দেশ, তখন এই রূপান্তরিত জাতি তার সব স্বপ্ন পূরণের প্রতীক নেতার কাছে কী প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে ছিল, তাদের ভেতরে উত্তেজনার পারদ কোন পর্যায়ে, তা আমরা বুঝতে পারি।
৭ মার্চের পটভূমি আমাদের কাছে পরিস্কার। এই অসামান্য ভাষণটি নিয়ে আমার ২০১১ সালের নগণ্য ভাষণে এটিকে কালোত্তীর্ণ শিল্পকর্ম বলেছিলাম। শিল্পকর্ম- কারণ এতে একটি জাতির সংগ্রাম ও স্বপ্নকে এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে, তার বহুমাত্রিক ব্যাখ্যা ও বিশ্নেষণের অবকাশ রয়েছে। ফলে একটি শিল্পকর্মের মতোই এটি হয়ে উঠেছে অমর, অনিঃশেষ। এর স্বাদ বারবার নেওয়া যায়, নতুনতর বাস্তবতায় এর নতুন নতুন ব্যাখ্যা ও বিশ্নেষণেরও সুযোগ তৈরি হয়। আজ তাই এ ভাষণটি কেবল শিল্পকর্ম নয়; কালোত্তীর্ণ শিল্পকর্ম। দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অনুপ্রেরণার জন্য যেমন আমরা শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধে যাই; বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি যেন জাতির জীবনে তেমনই সার্বজনীন একটি প্রতীক। এই ভাষণের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য চুম্বকে তুলে ধরতে চাই-
ক. শুরুতে ‘ভায়েরা আমার’ সম্বোধনেই বঙ্গবন্ধু বুঝিয়ে দিয়েছেন- তিনি তাদেরই একজন অর্থাৎ তিনি মানুষের মানুষ।
খ. তারপর ব্যক্ত করলেন মানুষের প্রতি তার অঙ্গীকার।
গ. তাই জনগণকে সঙ্গে নিয়েই তিনি প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হলেন।
ঘ. তিনি জানেন জনগণের আকাঙ্ক্ষা আর পাকিস্তান সরকারের শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস।
ঙ. বিশেষভাবে ইয়াহিয়া খানের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্র তার কাছে পরিস্কার- সে কথা জনগণকেও জানিয়ে রাখলেন।
চ. একজন গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ হিসেবে, তদুপরি মানবতাবাদী নেতা হিসেবে তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও ন্যায্য কথা হলে তা মানার ঔদার্য দেখালেন।
ছ. ভুট্টোর খলচরিত্র বুঝতেও বাকি থাকেনি। তা ফাঁস করে দিলেন তার অনুসারীদের কাছে।
জ. পরিস্থিতির জন্য ইয়াহিয়া-ভুট্টো যে বাংলার মানুষকে, এমনকি সরাসরি তাকে দোষারোপ করছেন; সে বিচারের ভার জনগণের হাতে দিলেন।
ঝ. এই বঞ্চনা, প্রতারণা, এই উপেক্ষা, দোষারোপের ষড়যন্ত্র তিনি জনগণের কাছে আরেকটু বিস্তারিত তুলে ধরলেন।
ঞ. তার পর? এবার তিনি জননায়কের ভূমিকায় সরাসরি পাকিস্তান সরকারের দরবারে জনগণের হয়ে স্পষ্ট ভাষায় দাবি পেশ করলেন।
ট. সঙ্গে সঙ্গে প্রবঞ্চক পাকিস্তান সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তার দেশবাসীকে এ পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা দিলেন। বঙ্গবন্ধু এবার বাঙালির মুক্তির মহানায়ক।
ঠ. ডাক দিলেন মুক্তিযুদ্ধের। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বললেন এবং প্রতিপক্ষকে শত্রুরূপে আখ্যায়িত করলেন।
ড. স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন- ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ কেননা, ‘আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দমাতে পারবে না।’
ঢ. আর পিছু হটার সুযোগ নেই, নিজের হাতেই তুলে নিলেন শাসনভার- সব সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মী- সবাইকে নির্দেশ দিলেন করণীয় সম্পর্কে।
ণ. শাসক হিসেবে সুবিচার ও ন্যায়বোধকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরলেন- ‘এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান, বাঙ্গালি-নন বাঙ্গালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের ওপর, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’
ত. তার পর তো যুদ্ধযাত্রায় এগিয়ে যাবে জাতি। তাই মহান আল্লাহর ওপর নির্ভরতা ব্যক্ত করে অনুসারী জাতিকে মুক্তির পথে এগিয়ে দিলেন- ‘মনে রাখবা :রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব- এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।’
থ. শেষ কথা মুক্তি, স্বাধীনতা- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
আজও কেন আমরা এ ভাষণটি শুনি? এ ভাষণ শুনলে আজও কেন অনুপ্রাণিত বোধ করি? এবং কেন মনে হয়, যিনি বাঙালি; তার দেশ-ধর্ম যাই হোক; এ ভাষণ একবার অন্তত না শুনলে তার চেতনায় ঘাটতি থেকে যাবে?
বাংলার লোকগান না শুনলে বা তাতে রস না পেলে যেমন ঠিক বাঙালি হওয়া যায় না, তেমনি এ ভাষণ না শুনলে, এটি শুনে অনুপ্রাণিত বোধ না করলে, সেও বোধ হয় খাঁটি বাঙালি হয় না। জঙ্গি হয়, মৌলবাদী হয় কিংবা দিশেহারা মানুষ হয়ে যায়। এটি কেবল বাঙালির নয়, এ দেশে বসবাসরত সব মানুষের, রাজনৈতিক দিগদর্শনের আলেখ্য।
শহীদ মিনার যেমন আমাদের চেতনার প্রতীক, সারাদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটি ছড়িয়ে পড়েছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ বাঙালিমাত্রেই অন্তরে ঠাঁই করে নিয়েছে। এ ভাষণের সূত্রে এর পেছনের মানুষটি, যিনি এর শিল্পী, তার জীবনের আলেখ্যও সবাইকে আবেগের অনুপ্রেরণায় উদ্দীপ্ত করে। বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঙালি জীবনের প্রতীক। আর তাই তার চেতনায় আবেগ ও উদ্দীপনার নতুন সঞ্জীবনী সঞ্চার করে। হয়তো তাই এ দেশের ইতিহাসের বড় বড় সংগ্রামী কিংবদন্তি নেতা যেমন তিতুমীর, নেতাজি, মাস্টারদাকে ছাপিয়ে বঙ্গবন্ধুই হয়ে যান সৃজনশীল মানুষের চেতনার অফুরন্ত খোরাক। সমকালের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা, যাদের তিনি এক সময় গুরু মেনেছেন- শেরেবাংলা, সোহরাওয়ার্দী, ভাসানীকেও ছাপিয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধ। তাদের স্মৃতি ঝাপসা করে দিয়ে, ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ করে তিনি হয়ে ওঠেন এ দেশের সাধারণ মানুষের প্রাণের নেতা। চলমান ইতিহাসে এখনও প্রাসঙ্গিক, এখনও প্রেরণার জীবন্ত উৎস।
তাই বঙ্গবন্ধুকে নিয়েই যুগ যুগ ধরে রচিত হচ্ছে অমর জনপ্রিয় সব গান, কবিতা, ছড়া। মানুষ তাদের নেতাকে স্মরণ করতে চায়। চায় স্মরণীয় করে রাখতে। আমরা এমন কিছু নমুনা শুনে রাখব।
প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের প্রবীণ মনীষী প্রয়াত অন্নদাশঙ্কর রায়ের বহুশ্রুত মন্ত্রোপম অনবদ্য কবিতাটি, যেটি তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১-এ লিখেছেন, যখন বঙ্গবন্ধু শত্রুর দেশে কারাবন্দি, যে কোনো সময়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়-
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা /গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার/ শেখ মুজিবর রহমান।
দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা/ রক্তগঙ্গা বহমান
নাই নাই ভয় হবে হবে জয়/ জয় মুজিবর রহমান।
যখন দেশ দখল করে নিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী খলশক্তি, তখন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লিখেছেন –
বঙ্গবন্ধু! তোমার বন্ধু আজ বাংলার জনগণ
টুঙ্গিপাড়ার কবরে শুয়ে কি শোনো না তাদের ক্রন্দন?
আর একবার তুমি ডাক দাও
এই দেশ হতে কুকুর তাড়াও।
তুমি ডাক দিলে আবার দাঁড়াবে শির খাড়া করে জনতা।
জয় বাংলার বজ্রধ্বনিতে প্রাণ পাবে মরা স্বাধীনতা।
(আংশিক)
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান বেঁধেছেন কবি ও গীতিকাররা। অজস্র গান। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার লিখেছেন- শোনো একটি মুজিবরের থেকে/লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি/আকাশে-বাতাসে ওঠে রণি/ বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।
মহীয়সী সুফিয়া কামাল কবিতায় বলেছেন-
এই বাংলার আকাশ বাতাস, সাগর, গিরি ও নদী
ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি
হেরিতে এখন মানবহৃদয়ে তোমার আসন পাতা
এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা, পিতা, বোন-ভ্রাতা।
শুধু প্রতিষ্ঠিত কবি-সাহিত্যিকরা নন; গ্রামবাংলার বাউল-ফকির, মেঠোপথের কবিগানের শিল্পী, নিরক্ষর কৃষক- সবার মুখেই ফিরেছে তাদের অন্তরের আকুলতা- বঙ্গবন্ধু, নেতা মুজিব, প্রাণপ্রিয় মানুষটির জন্য। বঙ্গবন্ধু যে সর্বস্তরের মানুষের অন্তরে জায়গা পেয়েছেন, তিনি যে মানুষের সৃজনশীল সত্তাকে নাড়া দিয়ে চলেছেন, তাতে বোঝা যায় তার সঙ্গে এ জাতির তৈরি হয়েছে এক মহৎ অকৃত্রিম হার্দিক বন্ধন। বঙ্গবন্ধু নিজেই এভাবে হয়ে ওঠেন বাঙালির এক অমূল্য সাংস্কৃতিক সম্পদ, ঐতিহ্যের অংশ। তাই তিনি বাস্তবের মহানায়ক যেমন, তেমনি এক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বও বটে।
রাজনীতি থেকে ইতিহাসে এবং ইতিহাস থেকে সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার হয়ে উঠে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন চিরকালের, যে কোনো সংকীর্ণ বিবেচনার ঊর্ধ্বে, স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। ৭ মার্চের ভাষণ সেই অমর ব্যক্তির কালোত্তীর্ণ শিল্পকর্ম- এটির স্রষ্টা তিনি, আর এর সমঝদার সেদিন থেকেই সব বাঙালি, অনাগত দিনের নবপ্রজন্মও। আমরা লক্ষ্য করি, নতুন প্রজন্মের জন্য এ ভাষণ প্রথম শোনা সত্যিই কেবল নতুন নয় বিশেষ এক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। তাকে ঝাঁকুনি দেয়, তার চেতনার তন্ত্রীতে ঘা দিয়ে দেশের ডাক তার অন্তরে পৌঁছে দেয়।
কী সে ডাক?
মানুষের মুক্তির ডাক, সব অন্যায়, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনমানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ডাক।
সাহসের সঙ্গে অন্যায়, পাশব শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিশোধের ডাক।
অন্যায়-দুঃশাসনের কাছে মাথা নত না করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের ন্যায্য দাবি তুলে ধরার ডাক, ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিত কর্মসূচির মাধ্যমে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ডাক।
ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সর্বোচ্চ ত্যাগের মনোবল নিয়ে বীরের মতো লড়ার ডাক। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের ডাক; মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামের ডাক।
বঙ্গবন্ধুর এসব স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কত বাধা কত ষড়যন্ত্র এবং কত হীন অপরাধ এ দেশে ঘটে গেছে, আমরা জানি। রাজনীতিকে নানাভাবে কলুষিত করে ক্ষুুদ্র স্বার্থের গণ্ডিতে খাটানো হলো। মানুষকে উচ্চ আদর্শের নৈতিকতা থেকে বিচ্যুত করা হলো। বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে বিচ্যুত করে তার স্বপ্নের পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান ও প্রভাব খাটিয়ে এই কাজ করা হলো। টানা দুই দশক তা চলল। এ সময় যেসব তরুণ পরিণত বয়সে পৌঁছেছে, যে শিশু তারুণ্য অর্জন করেছে, তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্নের কথা ঠিকমতো শোনেনি। শোনেনি এই প্রাণস্পর্শী ভাষণটি। জানেনি কীভাবে এ দেশ একদিন জেগে উঠেছিল; সব বাধা-প্রতিরোধ ভেঙে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আকুল হয়ে উঠেছিল। সব ক্ষুদ্রতা, বিভেদ ভুলে ঐক্য ও বীরত্বে মহৎ হয়ে উঠেছিল।
এখন কন্যাই নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন পিতার পথে জাতিকে ফেরানোর দীর্ঘ কঠিন সংগ্রামে। নিশ্চয় তার দলের এবং এ দেশের দেশপ্রেমিক সচেতন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও জনগণ অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগ করেছেন। এ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয়, তার এক অফুরন্ত ভাণ্ডার জাদুকরী এই ভাষণ। এও যেন শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধের মতো প্রেরণার অনন্য উৎস।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন এ দেশের খেটে খাওয়া জনমানুষের নেতা। তাই দেশ নিয়ে তার স্বপ্নে বৈষম্য-বঞ্চনামুক্ত, সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় সংকীর্ণতামুক্ত, ধনী-দরিদ্র সবার নাগরিক অধিকার ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সমতাভিত্তিক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা গুরুত্ব পেয়েছে। আজকের পরিবর্তিত বিশ্বে এ কাজে নিশ্চয় নতুনতর মাত্রা যুক্ত হয়েছে। কাজটা হয়ে পড়েছে কঠিন, জটিল। আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ, ধর্মীয় চরম পন্থা, ধনবাদী বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসানির্ভর অর্থনীতি, মুক্তবাজার-সৃষ্ট ভোগবাদ এবং পশ্চিমের আধিপত্যবাদ উন্নয়নশীল দেশের সমাজ ও রাষ্ট্রের সামনে কঠিন সব চ্যালেঞ্জ হাজির করে চলেছে। আশার কথা, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়েই আমরা এগিয়ে চলেছি। সামনে আরও বাধা পেরোনো এবং পথ পাড়ি দেওয়া বাকি। বিশেষভাবে যে অগ্রগতি হচ্ছে তা ধরে রাখা, তাকে টেকসই করে তোলা ভীষণ জরুরি। তার জন্য মানুষের অন্তরে গণতন্ত্র, দেশপ্রেম, মানবহিতৈষী চেতনার বীজ সঞ্চার ও পরিপুষ্ট করতে হবে। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক রূপান্তরের কাজেও পরিকল্পিতভাবে হাত লাগাতে হবে। কীভাবে একটি রাজনৈতিক ভাষণ একটি জাতির সাংস্কৃতিক চেতনাকে সমৃদ্ধ করে নতুন পথে এগিয়ে চলার প্রেরণা দেয়, তারই তো সাক্ষী আমরা। তাই এ ক্ষেত্রেও আমাদের পথ হারানোর কথা নয়।
সত্যিই এ ভাষণটি আমাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারে পরিণত হওয়ার ফলে এই বিশ্বাস আমরা পাই- কোনো অপশক্তিই আমাদের কখনও দীর্ঘকাল দাবায়ে রাখতে পারবে না। এ ভাষণ আমাদের মুক্তির মন্ত্র, সংগ্রামের চেতনা, আত্মত্যাগের প্রেরণা।
কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক।
নোট: সমকাল থেকে নেয়া।
Our facebook page