শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র, ১৪৩০

গত ছ’বছর ধরে টানা যুদ্ধে সিরিয়া এখন প্রায় শ্মশান। তবে এই কয়েক বছরে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিরিয়ার শৈশব।

আর তার হিসেবে ২০১৬ সালটা ভয়াবহ, সোমবার একটি রিপোর্টে জানাচ্ছে ইউনিসেফ।

ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১২ মাসে অন্তত ৬৫২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে সিরিয়ায়। যা ২০১৫ সালের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি। স্কুল থেকে শুরু করে দোকান-বাজার, হাসপাতাল, খেলার মাঠ সর্বত্র শুধু যুদ্ধের ছাপ। এই মুহূর্তে সিরিয়ায় একটি স্কুলও অক্ষত নেই। ছ’বছরের ছোট্ট আহমেদের কথায়, ‘‘আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আর বোধ হয় কিছুই হতে পারব না, কারণ আমাদের এখন আর কোনও স্কুলই নেই। আগে স্কুলের মাঠে খেলতে আসতাম। এখন ভয় লাগে।’’ গত এক বছরে অন্তত ৮৫০ শিশুকে যুদ্ধক্ষেত্র নিয়োগ করা হয়েছে। যে সংখ্যাটা আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। কোথাও বা সশস্ত্র সেনার মুখে গুলি খেতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে তাদের।

আত্মঘাতী জঙ্গি, পারতপক্ষে জেলখানার নিরাপত্তা রক্ষক— সিরিয়ার শিশুদের সামনে ভবিষ্যৎ বলতে এখন এই কয়েকটা রাস্তাই খোলা।

দিনের পর দিন, যে ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে সিরিয়ার শিশুরা দিন কাটাচ্ছে, তাতে তাদের ভরসা বলতে মানবাধিকার সহায়তা।

রিপোর্ট অনুসারে, এই মুহূর্তে অন্তত ৬০ লক্ষ শিশু নির্ভর করছে মানবাধিকার সহায়তার উপর। কিন্তু তার বাইরেও বিভিন্ন এলাকার প্রায় আড়াই লক্ষ শিশু খাবার, জল, চিকিৎসার অভাবে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে মৃত্যুর দিকে।

ব্রিটিশ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে, সিরিয়ার অধিকাংশ শিশুই এখন ‘টক্সিক স্ট্রেস’ নামে এক মানসিক রোগের শিকার। প্রতিনিয়ত যুদ্ধের বিভীষিকার সঙ্গে যুঝতে যুঝতে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছে তাঁরা। ছ’বছরের নীচে বয়স, এমন অন্তত ৩০ লক্ষ সিরীয় শিশু জন্মের পর থেকে যুদ্ধ ছাড়া আর কিছুই দেখেনি, জানেও না। ঘুমের মধ্যে বারবার ভয় পেয়ে কেঁদে ওঠে বছর তিনেকের সায়েদ। বাবা ফিরাজ জানালেন, চোখের সামনে ওরই মতো আর একটি শিশুকে কেটে ফেলতে দেখেছিল সায়েদ। তার পর থেকেই দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে ওঠে ও। ভাবে ওকেও মেরে ফেলা হবে।

২০১১ থেকে গৃহযুদ্ধে অন্তত ৪০ লক্ষ সিরিয়াবাসীর মৃত্যু হয়েছে। রাস্ট্রপুঞ্জের দাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এত বড় মানবিক সঙ্কটের মুখে বিশ্বকে কখনও পড়তে হয়নি। সূত্র: আনন্দবাজার।

বিভাগ
আন্তর্জাতিক
প্রকাশিত হয়েছে
নিউজটি পড়া হয়েছে
৪৬৫০৫ বার
faysal


Our facebook page