ভারতে বিভিন্ন শহর জুড়ে করা এক সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, সে দেশে তরুণ-তরুণীদের প্রতি তিনজন ফেসবুক ফ্রেন্ডের মধ্যে একজনই তাদের সম্পূর্ণ অপরিচিত বা অচেনা।
আরও যেটা অবাক করার মতো তথ্য, এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে তাদের মাত্র ১০ শতাংশ ফ্রেন্ড পরিবারের কোনও সদস্য বা আত্মীয়স্বজন।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস প্রতি বছর ‘জেনারেশন জেড’ নামে যে জরিপ চালিয়ে থাকে, তা থেকেই এই সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
এই জরিপের উদ্দেশ্য হল অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের ডিজিটাল হ্যাবিট সম্পর্কে ধারণা পাওয়া, অর্থাৎ সাইবার জগতে তারা কেমন আচরণ করে ও কেন করে সেই ছবিটা তুলে ধরা।
এ বছরের জরিপে ভারতের ১৫টি শহরে ১১ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীর মতামত নেওয়া হয়েছে, যারা নিয়মিত ফেসবুক করে থাকে।
লখনৌ বা কোয়েম্বাটোরের মতো শহরে দেখা গেছে, সেখানে ছাত্রছাত্রীরা তাদের অর্ধেক ফেসবুক ফ্রেন্ডকেই চেনে না কিংবা নামমাত্র চেনে। ভুবনেশ্বর বা কলকাতায় এই অচেনার সংখ্যা ৪০ শতাংশের বেশি।
ব্যাঙ্গালোর, ইন্দোর, নাগপুর, কোচি, আহমেদাবাদ বা মুম্বইতে অপরিচিত ফেসবুক ফ্রেন্ডের সংখ্যা শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগের মধ্যে।
ফেসবুকে নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থাকার জন্য ন্যূনতম ১৩ বছর বয়স হতে হয়, কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গেছে বহু কমবয়সী ছাত্রছাত্রীই ভুয়ো জন্মতারিখ দিয়ে তাদের সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট থুলে থাকে।
শিশু ও কিশোর মনস্তত্ত্ব নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা বলছেন এই প্রবণতা প্রমাণ করে যে দেশের ছাত্রছাত্রীরা সম্পূর্ণ অপরিচিতদের কাছ থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য কতটা মরিয়া।
ফেসবুকে ‘ফ্রেন্ডে’র তালিকা বিশাল হলে সেটা তাদের একটা আলাদা ভাল লাগার অনুভূতি দেয়।
মনস্তত্ত্ববিদ কবিতা ভার্মা বলছেন, তিনি দেখেছেন অনেক বাচ্চা ছেলেমেয়েই ফেসবুকে অ্যাক্টিভ থাকতে পছন্দ করে, কিন্তু সেখানে ‘প্রাইভেসি সেটিং’য়ের গুরুত্ব নিয়ে তারা আদৌ সচেতন নয়।