Latest News
ফেনীতে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে শিক্ষার্থী নিহত
মে ১৯, ২০২৪
বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
মে ১৯, ২০২৪
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ৪
মে ১৯, ২০২৪
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
« জয়নাল আবেদীন »
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার স্বীকৃতি হিসেবে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন অং সান সুচি। পঁচিশ বছর পরে তার সেই নোবেল কেড়ে নেওয়ার জোরালো দাবি উঠেছে বিশ্বব্যাপী। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর চলমান সেনাবাহিনীর বর্বরতার নেপথ্যে এই নেত্রীর ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন মহলের।
নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে এমার্সন যুন্থো নামের এক নারী সুচির নোবেল প্রত্যাহার চেয়ে এ আবেদন করেন।
‘চেঞ্জ ডট ওআরজি’তে করা আবেদনে সমর্থন জানিয়ে সই করছেন সারা বিশ্বের মানুষ। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ১০ টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত ওই আবেদনে সই করেন ২ লাখ ৬ হাজার ৬৮০ জন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক শান্তি এবং ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষায় যারা কাজ করেন, তাদেরকেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের মতো সর্বোচ্চ পুরস্কার দেয়া হয়। সুচির মতো যারা এই পুরস্কার পান, তারা শেষ দিন পর্যন্ত এই মূল্যবোধ রক্ষা করবেন, এটাই আশা করা হয়। যখন একজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী শান্তি রক্ষায় ব্যর্থ হন, তখন শান্তির স্বার্থেই নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির উচিত এই পুরস্কার হয় জব্দ করা নয়তো ফিরিয়ে নেয়া।’
‘চেঞ্জ ডট ওআরজি’তে কেবল নোবেল বিষয়ে নয়, পিটিশন দাখিল করা হয়েছে সুচি এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ঘিরে আরো নানা বিষয়ে। জাতিসংঘ বরাবর আলেক্সান্ডার নামের একজন আবেদন করেন। রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিষ্ঠুরতা বন্ধে রাখাইনে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর আবেদন করেন তিনি।
অং সান সুচিকে দেওয়া হার্ভার্ড হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাওয়ার্ড প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন ইংল্যান্ড থেকে ডা. খুরশিদ ইবনে ফায়াজ। এ ছাড়া বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে এ ধরনের আবেদন করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে নীরবতা ভাঙতে সুচির কাছেই আবেদন করেছেন আমেরিকাস্থ বার্মা টাস্ক ফোর্স। তাদের আবেদনে উল্লেখ করা হয়- ‘ভাঙো নীরবতা, থামাও গণহত্যা (ব্রেক দ্য সাইলেন্স, এন্ড দ্য জেনোসাইড)’।
১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া সুচির বিরুদ্ধে পিটিশনগুলো করার কারণ হলো রোহিঙ্গা মুসলিম প্রশ্নে তার নীরব অবস্থান। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরেই রাষ্ট্রীয় ও সংখ্যাগুরু বৌদ্ধদের সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে বরাবরই নিশ্চুপ থেকেছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এ নেত্রী। সুচির এমন আশ্চর্যজনক নীরবতা তার অনেক কট্টর সমর্থকের মনেও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পদার্পণের ঐতিহাসিক নির্বাচনে সুচির দল কোনও মুসলিম ব্যক্তিকে প্রার্থী না করার পর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আল জাজিরা তুলে আনে মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে সুচির ধারাবাহিক নীরবতার প্রশ্ন।
রোহিঙ্গাদের ওপর চলা নির্যাতনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একপ্রকার নীরব। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক মিয়ানমারের সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন। বাংলাদেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিলো, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তুলতে বাংলাদেশই সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারে।
চলমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় সুচিকে নিয়ে খুবই আশাবাদি ছিলেন রোহিঙ্গারা। এমনকি অক্টোবর থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর চলা নিপীড়নের বিষয়েও সুচি ইতিবাচক হস্তক্ষেপ করবেন বলে আশা করেছিলেন তারা। কিন্তু শেষপর্যন্ত সুচিকে পাশে পাননি রোহিঙ্গারা।
বরং তাদের অভিযোগ, নৃশংসতা চলার মধ্যেই সুচির পক্ষে একজন নেতা রাখাইনে এসে সহিংসতায় উসকানি দিয়ে গেছেন। সুচির বরাত দিয়ে ওই নেতা নাকি নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যত দ্রুত সম্ভব রাখাইনকে রোহিঙ্গামুক্ত করতে হবে।
Our facebook page