Latest News
ফেনীতে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে শিক্ষার্থী নিহত
মে ১৯, ২০২৪
বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
মে ১৯, ২০২৪
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ৪
মে ১৯, ২০২৪
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
কেরানীগঞ্জ থেকে : শেখার যেমন শেষ নেই। তেমনি আবার শেখার কোন বয়সও নেই। শিক্ষা বিভিন্ন মাধ্যমেই অর্জন করতে হয়। তবে আমরা আজকে এ প্রতিবেদনে যে শিক্ষার কথা বলছি সেটা হল বিবেকের শিক্ষা। আমরা যারা সমাজের প্রভাবশালীরা নিজেদেরকে অনেক বড় কিছু মনে করি বিশেষ করে তাদের জন্য আমাদের এ ছবিটি হওয়া উচিত একটি দৃষ্টান্ত।
ছবিটি কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাসরোড এলাকা থেকে তোলা। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একটি শিশু একটি ডাস্টবিনে ময়লা ফেলছে। শিশুর হাতের নাগালের বাইরে ডাস্টবিন, তারপরে পা উঁছিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টায় হাতের ময়লাটি ডাস্টবিনে ফেলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আমরা বড়রা কি করি। ডানে বামে তাকিয়ে একটু ফাঁকা দেখতে পেলেই ময়লার পলিথিনটি ছুড়ে মেরে চলে যাই বীরদর্পে। তখন কী একটিবারের জন্যও আমরা চিন্তা করি যে আমার চারপাশের পরিবেশ আমাকেই পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে?
কিন্তু ডাস্টবিন তার হাতের নাগালের বাইরে থাকা সত্যেও এই অবুঝ শিশুটি দৃঢ় মনোবলে অনেক চেষ্টা করে ডাস্টবিনেই তার হাতের ময়লাটি ফেলার চেষ্টা করছে। এটা তাকে কেউ শিখিয়ে দেয়নি কিংবা কারো ভয়েও সে এ কাজটি করেনি। এখানেই হল শিক্ষার বিষয়। আপনি আমি না বুঝলেও শিশুটি কিন্তু ঠিকই বুঝেছে কষ্ট করে হলেও ময়লা কোথায় ফেলতে হবে। ছবিটা কিন্তু আমাদের তোলা ছবি নয়। কিংবা কে তুলেছে তার নামও পাওয়া যায়নি। ছবিটা সোসাল মিডিয়া ফেইসবুক থেকে নেওয়া।
হয়ত কোন পথচারী তার মোবাইলে এ দৃশ্যটি ধারণ করে ফেইসবুকে আপলোড করে দিয়েছেন। আর সেটা দেখে একজন গুগল প্লাস ব্যবহারকারী ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন- ছবিটি শুধু ছবি নয়, বিশাল শিক্ষার উপকরণ। ইন্সটাগ্রামে এক তরুণী ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন- ‘শিখতে হবে আমাদের’। ফেসবুক ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন- ‘দেখুন, শিখুন’। ভাইরাল হয়ে যাওয়া ছবিটিতে আসলেই যে শেখার উপকরণ রয়েছে সেটা সহজেই অনুমেয়।
সরেজমিন জিনজিরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জিনজিরা বাসরোডকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আদলে গড়ে তোলার জন্য এলজিএসপি-২-এর অর্থায়নে স্থানীয় সাংসদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের নির্দেশনা অনুযায়ী জিনজিরা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সাকুর হোসেন সাকু অনেকগুলো ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন বসিয়েছেন। যার গায়ে লেখা আছে- ‘আপনার ইউনিয়ন আপনিই পরিচ্ছন্ন রাখুন’।
কিন্তু রাস্তা-ঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এগুলো বসানো হলেও এখনো যত্রতত্রই ময়লা ফেলা হচ্ছে। এগুলোর জন্য দায়ী কারা? তা এই শিশুটির কাছ থেকেই কিংবা তার আজকের এই ছবিটি দেখেই শিখে নিতে হবে আমাদেরকে।
জিনজিরা বাস রোড এলাকা ঘুরে আমরা আরো জানতে পেরেছি যে, হাজী সাকুর হোসেন সাকু ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর পরই পরিচ্ছন্ন জিনজিরা গড়ার লক্ষে তিনি জিনজিরা বাসরোডে হকারমুক্ত ফুটপাত গড়ার লক্ষে সকল অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছেন। ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন বসিয়েছেন। বাসরোডের প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে ফুলের টব রাখার ব্যবস্থা করেছেন।
তবে শিশুটিকে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে মনে করে গ্রীণ এন্ড ক্লিন কেরাণীগঞ্জ গড়ার লক্ষে এলাকাবাসী সবাইকে এভাবে সচেতন হবার আহ্বান জানিয়েছেন গ্রীণ এন্ড ক্লিন কেরাণীগঞ্জ গড়ার রূপকার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে জিনজিরা ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সাকুর হোসেন পাক্ষিক বুড়িগঙ্গাকে বলেন, স্থানীয় সাংসদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের অনুপ্রেরণায় এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রীণ এন্ড ক্লিন কেরাণীগঞ্জ গড়ার লক্ষে আমি আমার নির্বাচনী এলাকা জিনজিরা ইউনিয়ন থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেছি।
তিনি বলেন, আমি এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পুরো ইউনিয়নকে এ কর্মসূচির আওতায় আনতে চাই। তিনি আরো বলেন, এই শিশুটিই হতে পারে আমার এলাকাবাসীর জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
Our facebook page