রাহুল রায়:রঙ-তুলি দিয়ে মানুষের ছবি আঁকতে পারেন অনেকেই।আর নিজের ছবি রঙিন ক্যানভাসে দেখতে কে না চায়! তবে সেই ছবি যদি তৈরি হয় শব্দ দিয়ে তা যেনো এক নতুন মাত্রা যোগ করে। বিভিন্ন শব্দ দিয়ে মানুষের অবয়ব তৈরি করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। কালো কাগজের ওপর এই শিল্পীর শব্দের ছোঁয়া যেনো ক্যানভাসের থেকেও বেশি রঙিন। বলছিলাম, আফরিন আঁখির কথা। দারুণ প্রতিভাবান এই শিল্পী নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
আফরিন আঁখিরর ছবি আঁকার শুরুটা বেশিদিন নয়। বছর দুয়েক আগে ছবি আঁকার হাতেখড়ি হয় তার এক বড় ভাই সায়েম মুনীরের মাধ্যমে। আফরিন আঁখি মনে করেন সায়েম মুনীর তাকে ছবির মাধ্যমে বাঁচতে শিখিয়েছেন।যদিও তার ছবি আঁকার শুরুটা হয় ক্যানভাসে। “এ্যাক্রিলিক অন ক্যানভাস” ফর্মের তার আঁকা ছবির প্রদর্শনীও হয়েছে শিল্পকলা একাডেমীতে। তবে ক্যানভাসে ছবি এঁকে খুব তাড়াতাড়ি এতো বড় প্রদর্শনীর পরেও তাকে থামতে হয়েছে আর্থিক অভাবে।যেহেতু এখনো পড়াশোনা করছেন তাই ক্যানভাস এবং রঙ কেনার মতো সামর্থ্য নেই। কিন্তু শিল্প কি আর থেমে থাকে?
আফরিন আঁখির মতো শিল্পিরা থামতে দেয়না শিল্পের গতিকে। তাই রঙ কিনতে না পারলেও নিজেই আবিষ্কার করেন শব্দ দিয়ে মানুষের অবয়ব তৈরির নতুন এক আর্ট ফর্ম।শব্দ দিয়ে মানুষের ছবি আঁকছেন এবং তা বিক্রি করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নিজের শিল্পকে। তিনি মনে করেন শিল্প এবং সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতেই বিক্রি করতে হয় শিল্পকে।
শিল্প নিয়েই অনেকদূর এগিয়ে যেতে চাইলেও এই শিল্পী জানান নানা বাঁধার গল্প। তিনি মনে করেন অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের সমাজ শিল্প এবং শিল্পীকে যথেষ্ট সম্মান দেখাতে পারেনা। তার আশা একদিন আমরা সত্যিকার অর্থেই শিল্পকে লালন করতে শিখবো এবং সেদিন আরো অনেক প্রতিভাবান শিল্পীর খোজ পাবে বাংলাদেশ।
তিনি চান তার সৃষ্টি গুলো ছড়িয়ে যাক সকল বেড়াতার ভেঙে নানা প্রান্তের মানুষের কাছে। আবিষ্কার করতে চান আরো অনেক আর্টফর্ম। স্বপ্ন দেখেন দেশের বিভিন্ন স্থানে করবেন নিজের একক প্রর্দশনী। যেখানে বিভিন্ন ধরনের ছবির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চান মানুষকে। এছাড়া বর্তমানে বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে পড়াশোনা করলেও ভবিষ্যতে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা নিয়ে করতে চান বিস্তর পড়াশোনা।
সকল বাধা-বিপত্তি পেড়িয়ে আফরিন আঁখিরা সাক্ষর রাখুক দেশের শিল্পে। আঁখিদের মতো শিল্পীদের মাধ্যমেই তো বেঁচে আছে দেশের শিল্প। শ্রদ্ধা জানাই সকল শিল্পিকে, শ্রদ্ধা জানাই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চাওয়া প্রতিটি মানুষকে।