Latest News
ফেনীতে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে শিক্ষার্থী নিহত
মে ১৯, ২০২৪
বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
মে ১৯, ২০২৪
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ৪
মে ১৯, ২০২৪
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস আতংক কতটা জেঁকে বসেছে তা আক্রান্ত শহরগুলোর রাস্তায় বেরুলেই বোঝা যায়।
“রাস্তাঘাটে কেউ নেই, একদমই ফাঁকা। শিশুরা নেই, বয়স্ক লোকদেরও কাউকেই রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছে না। গত দুই দিন ধরে এমন অবস্থা দেখছি” – দেগু শহর থেকে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন জিয়াউর রহমান।
তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় এই শহরে আছেন আট বছর ধরে, কাজ করেন একটি কারখানায়।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস বা কোভিড নাইনটিন সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে ৬ শতাধিক লোক – মারা গেছেন ৫ জন। সংক্রমিতদের একটা বড় অংশই এই দেগু শহরের।
জিয়াউর রহমান বলছিলেন, “দেগুতে চার হাজারের বেশি বাংলাদেশি রয়েছে, এবং তাদের মধ্যে ফেসবুক বা অন্য উপায়ে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তাতে যেসব কথাবার্তা শুনছি – তাতে বুঝতে পারছি যে বাংলাদেশিরা ভীষণভাবে আতংকিত।”
“আজকে একটা শপিং মলে গিয়েছিলাম বাজার করতে। খাদ্যদ্রব্য তেমন একটা নেই। ফলমূলের অভাব দেখা যাচ্ছে। মানুষজন আগেই সব কিনে ফেলেছে। বেচাকেনা মোটামুটি শেষ। হ্যান্ডওয়াশ কিনতে গিয়েছিলাম, পাইনি।”
ঘরে খাবার মজুতের প্রবণতা দেখা গেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় অন্য বাংলাদেশিদের মধ্যেও । দেগু থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের বুসান শহরে থাকেন এ জামান শাওন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় আছেন চার বছর ধরে।
তিনিও বলছেন, বুসান শহরে ৬/৭ জন করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন বলে গতকাল পর্যন্ত জানা গেছে। শহরের রাস্তায় লোকজন কমে গেছে। লোকজনের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। অনেকেই দোকান থেকে নানা জিনিসপত্র কিনে ঘরে জমিয়ে রাখছেন।
এ জামান শাওন বলছেন, তিনি নিজেও এক মাসের খাবার কিনে ঘরে জমিয়ে রেখেছেন, এবং তার পরিচিত অন্য অনেকেই এটা করেছেন।
তিনি বলছেন, কর্তৃপক্ষ ১০ মিনিট পর পর মোবাইলে টেক্সট মেসেজ করে লোকজনকে নানা স্বাস্থ্য নির্দেশিকা জানাচ্ছে।
তবে দেগু থেকে জিয়াউর রহমান বলছেন, “আমি অতটা করি নাই। শাকসব্জি তো আর কেনা যায় না। আলু বা মাছের মতো যা ফ্রিজে রাখা যায় – সেগুলো কিছু কিনেছি।”
“আমি যে কারখানায় কাজ করি – তার কাছেই একটি এলাকা আছে সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার লোক বাস করে। সেখানকার কোন লোককে রাস্তায় বের হতে দেয়া হচ্ছে না।”
আপনি কি এ রোগের কথা ভেবে আতংকিত? এ প্রশ্ন করা হলে মি. রহমান বলেন, “আতংক তো অবশ্যই আছে। তবে একদিন তো মৃত্যু হবেই – কিন্তু আমি যদি আক্রান্ত হই তাহলে আমাকে হয়তো এক মাস হাসপাতালে থাকতে হবে, তার মধ্যে রোগ না সারলে আরো এক মাস। আমি এ দেশে একা – সে জন্য এতদিন হাসপাতালে থাকার কথা ভেবে ভয় হচ্ছে।”
“আল্লাহ না করুক, কোন প্রবাসী বাংলাদেশি যদি এখানে মারা যায় – তাহলে তার লাশটাও কিন্তু দেশে পাঠানোর কোন ব্যবস্থা নেই। এটাও একটা আতংক। আমি মনে মনে এটা চিন্তা করি। এটা একটা বিরাট জিনিস।”
এ অবস্থায় কিছুদিনের জন্য হলেও দেশে চলে যাবার চিন্তা করছেন কিনা – এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “না আমি এরকম চিন্তা করি নাই। আমি এখানেই নিরাপদ থাকার চেষ্টা করবো।”
“আমি আমার কাজের জায়গা থেকে এক কিলোমিটার দূরে থাকি। এই পথটা আমি সাইকেল চালিয়ে আসি। এই যাতায়াতটা আমার কাছে এক বিরাট আতংকের বিষয়। এই রাস্তাটুকুতে আমার কারো সাথে দেখা হলে কি হবে না হবে – এটা আমার এক বিরাট আতংক।”
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন বলছেন, এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আগামি কয়েকদিন কী ঘটে তা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
Our facebook page