যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে পারে কিন্তু তাদের উচিত স্নায়ুযুদ্ধের মনোভাব পরিহার করা। দুই পরাশক্তির মাঝে সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেছেন চীনের এক শীর্ষ কূটনীতিবিদ।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে। এছাড়া তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন এবং রাশিয়ার কাছ থেকে চীনের অস্ত্র কেনার কারণে দুই দেশের সম্পর্কের দিন দিন অবনতি হচ্ছে।
মঙ্গলবার সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিনিসঞ্জারের সাথে নিউইয়র্কে বৈঠকে চীনের জাতীয় উপদেষ্টা ওয়াং ই বলেন, বিবাদের কারণে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শুধু ক্ষতিই হবে। একে অপরকে স্নায়ুযুদ্ধের মনোভাব নিয়ে দেখা ঠিক হবে না। ওয়াং বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সংস্থা অনবরত চীনের ওপর কালিমা লেপন করে যাচ্ছে যা দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটাচ্ছে। এটি চলতে থাকলে কারো জন্যই ভালো হবে না।
সারা বিশ্বের জন্যই চীন-মার্কিন বিবাদ ক্ষতিকর। এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি পদক্ষেপের কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন। চীনের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম চায়না ডেইলির সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি সম্পর্কের শুধু অবনতি ঘটাবে। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে অর্থনৈতিক এবং সামরিক দিক দিয়ে চীনকে চাপে ফেলতে চাচ্ছে তাতে সন্দেহ হচ্ছে তারা স্থায়ীভাবে চীন-মার্কিন সম্পর্ককে বিনষ্ট করতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্রের উসকানির জবাব দিতে প্রস্তুত হবে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্য কর্মকর্তা বলেছেন চীনকে বাণিজ্য নীতি পরিবর্তন করানোর কাজটি সহজ হবে না। মঙ্গলবার জাতিসংঘের অধিবেশনেও ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করেছেন এবং ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেন তিনি আশা করেছিলেন মুক্ত বাণিজ্য নীতি নিয়ে বিশ্ব নেতাদের বক্তব্য বোঝার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের চিন্তা করা উচিত বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে তাদের কি ভূমিকা পালন করা উচিত।
গত সপ্তাহে নতুন করে বাণিজ্য আলোচনার সম্ভাবনা নস্যাত্ হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের। কোনো পক্ষই সহসাই আপোষে আসবে বলেও মনে হচ্ছে না। একজন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যন্ত এই অচলাবস্থা চলবে। -রয়টার্স