Latest News
ফেনীতে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে শিক্ষার্থী নিহত
মে ১৯, ২০২৪
বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
মে ১৯, ২০২৪
গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত- ৪
মে ১৯, ২০২৪
সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
নুরুল হক | ২৬ আগস্ট ২০১৬ »
শেরপুর সদর থেকে আনুমানিক দূরত্ব ৩০ কিমি। এখানে আসার জন্য সড়ক পথে যাতায়ত খুব সহজ। গজনী অবকাশ পর্যন্ত রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মসৃণ পিচঢালা পথ।
রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াতই সবচেয়ে উত্তম। উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল-জামালপুর হয়েও আসতে পারেন সড়ক পথে। শেরপুর শহর থেকে গজনীর দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। বাসভাড়া ৫০ টাকা। সিএনজি ভাড়া ২৫০ টাকা। ঢাকা থেকে সরাসরি মাইক্রোবাস অথবা প্রাইভেট কারে গজনী অবকাশ যেতে পারেন। ঢাকা থেকে নিজস্ব বাহনে মাত্র সাড়ে তিন থেকে চার ঘন্টায় ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশে আসা যায়। এ ছাড়া ঢাকার মহাখালি থেকে ড্রিমল্যান্ড বাসে শেরপুর আসা যায়। ভাড়া ২৫০টাকা।মহাখালী থেকে দুপুর ২টায় ছাড়ে এসি বাস। ভাড়া ৩৫০টাকা।
এছাড়া ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় ষ্টেডিয়াম ৪ নং গেইট থেকে সরাসরি বিকাল ৩-৪টায় শিল্প ও বণিক সমিতির গাড়ী ঝিনাইগাতীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ভাড়া ৩০০টাকা । যারা ড্রিমল্যান্ডে আসবেন, তারা শেরপুর নেমে নিউমার্কেট থেকে মাইক্রোবাস ৫০০ টাকায় সোজা গজনী যেতে পারবেন। শেরপুর থেকে লোকাল বাস,টেম্পু, সিএনজি অথবা রিক্সায় গজনী অবকাশ কেন্দ্রে যাওয়া যায়।এছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন জেলার ঐতিহ্যবাহী আরও কিছিু স্থান।
মধুটিলা ইকোপার্ক
ঢাকা থেকে মধুটিলা ইকোপার্কের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহ হয়ে শেরপুরে আসতে হবে। শেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী বাজার পর্যন্ত লোকাল বাস সার্ভিস রয়েছে। নন্নী বাজার থেকে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ভাড়ায় পাওয়া যায়। শেরপুর থেকে ভাড়ায় মাইক্রোবাস, অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেলে মধুটিলা ইকোপার্কে আসা যাবে। অথবা ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি নালিতাবাড়ী পর্যন্ত গেটলক সার্ভিস রয়েছে। জনপ্রতি ভাড়া ৩০০ টাকা। নালিতাবাড়ী থেকে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে ২০-২৫ মিনিটে মধুটিলায় যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে দিনে এসে দিনেই ফিরে যাওয়া যায়।
পানি হাটা তারানী পাহাড়:
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার এবং শেরপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে অবস্থিত এ স্থানটি। তবে ঢাকা থেকে শেরপুর জেলা শহরে না এসেই নকলা উপজেলা শহর থেকেই নালিতাবাড়ী যাওয়ার সহজ ও কম দূরত্বের রাস্তা রয়েছে। এরপর নালিতাবাড়ী শহরের গড়কান্দা চৌরাস্তা মোড় হয়ে সোজা উত্তরে প্রথমে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কাছাকাছি গিয়ে পূর্ব দিকটায় মোড় নিয়ে ভোগাই ব্রিজ পাড়ি দিতে হয়।এরপর সোজা পূর্ব দিকে প্রায় আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার গেলে চায়না মোড়। এ মোড়ে এসে আবারও গতিপথ বদলে যেতে হয় উত্তরে।উত্তরের এ রাস্তা ধরে প্রায় এক কিলোমিটার গেলেই পানিহাটা-তারানির মূল পয়েন্ট।ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিকশা, সিএনজি অটোরিশা বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলেও যাওয়া যায় নালিতাবাড়ী শহর থেকে মাত্র ৩৫-৪৫ মিনিটের ব্যবধানে এবং অল্প খরচের মধ্যেই। এতে মোটরসাইকেল ভাড়া আসা-যাওয়ায় প্রায় ১৫০ টাকা।
রাজার পাহাড় ও বাবেলাকোনা :
দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে বাসে বা যে কোনো যানবাহনে আসা যায় শেরপুর শহরে। এখান থেকে মাত্র ৩৪ কিলোমিটার দূরে শ্রীবরদীর কর্ণঝোরা বাজার। বাস, টেম্পুসহ যে কোনো যানবাহনে আসা যায় মনোমুগ্ধকর নয়ানিভিরাম স্থান রাজার পাহাড় থেকে বাবেলাকোনায়। পাশেই রয়েছে অবসর কেন্দ্র। রাত হলে সেখানে থাকার জন্য রয়েছে নিরাপত্তাবেষ্টিত আবাসিক ভবন। কম খরচে ,কম সময়ে এ গারো পাহাড় আপনাকে দেবে অনাবিল আনন্দ।
গড়জরিপা বার দুয়ারী মসজিদঃ স্থাপত্য নিদর্শনের অন্যতম গড় জরিপা বার দুয়ারী মসজিদ । এটিও এ অঞ্চলের ঐতিহ্য । জনশ্রুতিতে আনুমানিক ৭-৮ শত বৎসর পূর্বে জরিপ শাহ নামক এক মুসলিম শাসক কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল এই মসজিদটি। তবে এটি বর্তমানে পুনঃ নির্মাণ করা হয়েছে। আসল মসজিদটি ভূ-গর্ভেই রয়ে গেছে। তার উপরেই স্থাপিত হয়েছে বর্তমান মসজিদটি। জামালপুর সদর উপজেলার তীতপল্লী ইউনিয়নের পিঙ্গলহাটী(কুতুবনগর) গ্রামের (ব্রাহ্মণ ঝি বিলের উত্তর পাড়ে) জনৈক পীর আজিজুল হক সাহেব খনন কার্য চালান এবং বের করেন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ । মসজিদটির ইটের ধরণ কৌশলে খান বাড়ী মসজিদের ইটের সাথে যথেষ্ট মিল লক্ষ্য করা যায় । প্রাচীন রীতির সাথে আধুনিক রীতির সংমিশ্রণে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে যা সহজেই দর্শকদের মন জয় করে। অপরূপ সুন্দর এই মসজিদটি আসলে পুরাকীর্তির নিদর্শন ।১২টি দরজা থাকায় এর নামকরণ করা হয় বার দুয়ারী মসজিদ। পূর্বেও তাই ছিল। অপূর্ব কারুকাজ সম্বলিত মেহরাব ও কার্ণিশ গুলো সকলের দৃষ্টি কাড়ে। এছাড়াও কিছু দূরে জরিপ শাহ এর মাজার অবস্থিত। এর অনতিদূরে কালিদহ সাগর রয়েছে। জনশ্রুতিতে আছে চাঁন্দ সওদাগরের ডিঙ্গা এখানেই ডুবেছিল। নৌকার আদলে কিছু একটা অনুমান করা যায় এখনও । অঞ্চলটিতে একবার ঘুরে এলে যে কোন চিন্তাশীল মানুষকে ভাবিয়ে তুলবে। খনন কার্য চালালে হয়তো বেরিয়ে আসবে এ অঞ্চলের হাজার বৎসরের প্রাচীন সভ্যতার নানা উপকরণ ।
রং মহলঃ জমিদার বাড়ির ঠিক দক্ষিণ পূর্ব কোণে অবস্থিত রং মহল।যা দেখে সহজেই ধারণা করা যায় জমিদাররা ছিল সংস্কৃতি প্রিয়। নাচ-গানের প্রতি ছিল অনুরাগ।ফলে অনেক জমিদার বাড়িতেই রং মহল ছিল। উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বি এই স্থাপত্যটিতে রয়েছে অনেক গুলো কাঠের জানালা।জানালার উপরে দর্শানীয় ভেন্টিলেশনের ব্যবহারও রয়েছে যা ইচ্ছা মত ব্যবহার করা য়ায় ।এ ছাড়াও ছাদের নিচের অংশে কাঁচের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা করা হয়েছে যা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে। সমস্ত ভবনটির গা জুড়ে বিভিন্ন রকমের নকশা ফুল, লতা-পাতা ও মটিভ ব্যবহার করা হয়েছে। কার্ণিশ ও কার্ণিশের নিচে রয়েছে অপরূপ নকশা। দক্ষিণ অংশটিতে অনেক কারু কাজের ব্যবহার ।এ দিকটাই ভবনটির সম্মুখ অংশ ।ছয়টি গোলাকৃতি স্তম্ভ ও দুই কোণায় দুইটি চার কোণা স্তম্ভের নিচ থেকে শেষ ভাগ পর্যন্ত নকশাখচিত।দক্ষিণ দিকের অংশের সম্মুখভাগে রয়েছে ৬টি গোলাকার স্তম্ভ। দুই কোণায় কোণাকৃতির স্তম্ভে ব্যবহার করা হয়েছে বক। স্তম্ভগুলির নিচে থেকে শেষ পর্যন্ত অলংকৃত। ছাদ এবং কার্নিশের উপরের অংশে পাঁচটি প্রধান ও অনেকগুলো মিনারাকৃতি গম্বুজ এর আদলে নকশা রয়েছে যা স্থাপত্যটিকে অধিক আকর্ষণীয় করেছে। কার্নিশেও বিভিন্ন ফর্মের
বারোমারি গীর্জা ও মরিয়ম নগর গীর্জা দুটিই শেরপুর জেলার নানা ধর্মের ঐতিহ্য বহন করে। স্থাপত্য কলার অন্যতম নিদর্শন গীর্জা গুলির নির্মাণে অনেক কলা কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে।শেরপুর শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় যতগুলি স্থাপত্য নির্মাণ হয়েছিল তার বেশীর ভাগই নির্মাণ হয়েছিল জমিদারদের পৃষ্ঠপোষকতায় কিংবা তাদের প্রয়োজনেই।যেমন বাস ভবন, রংমহল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একজন ভ্রমন পিপাসু হিসেবে আপনার মনের খোরাক জোগাবে আশা রাখি।
Our facebook page