Latest News
কালিহাতীতে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
মে ১৮, ২০২৪
গোবিন্দগঞ্জে ২১ কেজি গাঁজা জব্দ
মে ১৮, ২০২৪
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে বাশার আসাদ বিরোধী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সবশেষ এলাকাটি ছিল ইয়ারমুক।
এখানে ইসলামিক স্টেট সহ একাধিক বিদ্রোহী গ্রুপ সক্রিয় ছিল। তবে গত মাসে ব্যাপক বোমাবর্ষণ ও সম্মুখযুদ্ধের পর তারা ইয়ারমুক ছেড়ে চলে গেছে।
আইএসের নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় ইয়ারমুকের মেয়েদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন স্কুলগুলো আবার খুলেছে, ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে।
ইয়ারমুক থেকে বিবিসির ক্যারোলাইন হলি জানাচ্ছেন, এখানকার স্কুলের মেয়েদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা স্কুলে লেখাপড়া করার জন্য ভয়ংকর সব ঝুঁকি নিয়েছে।
তারা যেখানকার বাসিন্দা – সেই এলাকা ছিল আইএসের দখলে। তারা মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই মেয়েরা তা প্রতিহত করেছে।
এদের একজনের নাম জেরিন সুলাইমন। তার বয়েস ১৫।
তিনি বলছেন, “লেখাপড়া করার যে মৌলিক অধিকার তা আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। আমাদের স্কুলে যেতে দেয়া হতো না। আমরা যেন শপিং করতে ইয়াল্দায় যাচ্ছি – এমন ভাব করে স্কুলে যেতাম।”
আরেক জন ছাত্রী ১৪ বছরের ফাতিমা। তিনি বলছিলেন, তার এক বান্ধবীকে আইএস পিটিয়েছিল কারণ তার কাছে লেখার খাতাপত্র পাওয়া গিয়েছিল।
“আমরা আমাদের হিজাবের নিচে বা জুতোর মধ্যে বই খাতাপত্র লুকিয়ে রাখতাম। বা এমন যে কোন জায়গায় যাতে ওরা খুজে না পায়। খুঁজে পেলে – এমনকি তা যদি সাদা কাগজও হতো – তাহলেও তারা তা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলতো।”
জেরিন বলেন, তারা মেয়েদের নিকাব পরতে বাধ্য করতো, সাথে কোন বই পত্র রাখতে দিতো না। স্কুলের সাথে সম্পর্কিত যে কোন জিনিসই তাদের চোখে ছিল নিষিদ্ধ।
তারা এমনকি কলম বা রুলারও ভেঙে ফেলতো।
তাদের চোখকে ফাঁকি দেবার জন্য এই মেয়েরা মোবাইল ফোন আর সামাজিক মাধ্যমকে কাজে লাগায়।
ফাতিমা বলছিলেন, বোর্ডে শিক্ষক যা লিখতেন – আমরা মোবাইল ফোন দিয়ে তার ছবি তুলে রাখতাম। সেটা সোশাল মিডিয়ায় বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতাম।
ইয়ারমুক আইএসের দখলে থাকার সময় লড়াই চলার মধ্যে নেটওয়ার্ক সবসময় পাওয়া যেতো না। পেতে হলে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ির ছাদে উঠতে হতো।
ফাতিমা বলছিলেন, আমাদের কোন বইপত্র ছিল না। ছিল শুধু মোবাইল ফোন। তার কথায়, শিক্ষাই হচ্ছে সবকিছু । আর এটাই আমাদের অস্ত্র।
আইএসের শাসনামলের ভয়াবহ সব ঘটনার সাক্ষী এই স্কুলছাত্রীরা।
জেরিন বলছিলেন, কাউকে হত্যা করার পর তারা শিশুদের সুযোগ দিত সেই মৃতদেহকে ক্ষতবিক্ষত করার। কেউ সিগারেট খেলে তাকে তারা খাঁচায় ভরে রাখতো। কখনো কখনো খাঁচার ওপর তার কাটা মাথাটা বসিয়ে খাঁচার ভেতরে দেহটা ফেলে রাখতো।
পরীক্ষা হয়ে যাবার পর এই মেয়েরা অন্য আর দশটা ছাত্রীর মতোই ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন।
কিন্তু আসলে তারা আরো বড় এক পরীক্ষা পার হয়ে এসেছে – যা অনেক সময় সময় জীবনমৃত্যুর পরীক্ষা।
Our facebook page